ছালাতের গুরুত্ব


ছালাত হচ্ছে সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত

চারপ্রকার ইবাদতের মধ্যে ছালাত হচ্ছে সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ, ফযীলত পূর্ণ। এবং মুমিনের সবচেপ্রিয় ইবাদত। ছালাতের গুরুত্ব তো এই পরিমাণ যে, হযরত আনাস রা. হতে বর্ণিত হাদীছে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

مكان الطهارة) مفتاح الجنة الصلاة ومفتاح الصلاة الظهور (وفي سنن الترمذي الوضوء 

জান্নাতের চাবি হলো ছালাত, আর ছালাতের চাবি হলো তাহারাত (অর্থাৎ অযু বা গোসলের মাধ্যমে পবিত্র হওয়া) (মুসনাদে আহমদ, হাদীছ নং ১৪৬২, তিরমিযি, হাদীছ নং )


ছালাত জান্নাতের চাবি

এখানে চাবির উপমাটি বড়ই তাৎপর্যপূর্ণ। চাবি ছাড়া যেমন তালা খোলা যায় না তেমনি তাহারাত ছাড়া ছালাত আদায় হয় না। তো যেহেতু ছালাতের জন্য তাহারাত হচ্ছে শর্ত সেহেতু তাহারাতকে চাবির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। আবার ছালাতকে বলা হয়েছে জান্নাতের চাবি। সুতরাং যে ব্যক্তি ছালাতের পাবন্দ সে যেন চাবিহাতে জান্নাতের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো এবং দরজা খুলে জান্নাতে প্রবেশ করলো আর যে ছালাতের পাবন্দি করে না সে যদি কোনভাবে জান্নাতের দরজার সামনে পৌঁছেও যায়, চাবির অভাবে সে দরজা খুলতে পারবে না এবং জানাতে দাখেল হতে পারবে না।

 

হাদীছ শরিফে সালাতের গুরুত্ব

হাদীছ শরীফে আছে-

الصلاة عماد الدين فمن تركها فقد هدم الدين

ছালাত হচ্ছে দ্বীনের বুনিয়াদ সুতরাং যে তা তরক করলো সে দ্বীনকেই বরবাদ করলো। (ইহয়াউ উলূমিদ্দীন, পৃ.১৮৭)

এমনকি ছালাতই হচ্ছে ইসলাম কুফুরের মধ্যে পার্থক্যকারী একমাত্র আমল। হাদীছ শরীফে এসেছে-

بين الكفر و الإيماني ترك الصلوۃ

ছালাত তরক করাই হচ্ছে কুফুর ঈমানের মধ্যে পার্থক্যকারী। (তিরমিযি হাদীছ নং ২৬১৮)

ছালাত এমনই মাহবুব প্রিয় আমল যে, হযরত আনাস রা. হতে বর্ণিত হাদীছে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন

جعلت قرة عيني في الصلوۃ

আমার চোখের শীতলতা রাখা হয়েছে নামাযের মধ্যে। (নাসাঈ, নং ৩৯৫০)

অন্য এক হাদীছের ভাষ্যমতে যখন ছালাতের সময় হতো তখন নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলতেন, হে বিলাল, ছালাতের ইন্তিযাম করে আমাকে শান্তি দাও। অর্থাৎ ছালাতই ছিলো তার চোখের শীতলতা এবং তার দিলের শান্তি।

আর কোন ইবাদত সম্পর্কে আল্লাহর পেয়ারা হাবীব ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ বলেননি। হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী (রহ.) বলেন, দুনিয়াতে ছালাতের মরতবা হলো আখেরাতে আল্লাহর দীদারের সমান। এখানে নৈকট্যের চূড়ান্ত হলো ছালাতের মধ্যে, আর ওখানে নৈকট্যের চূড়ান্ত হবে দীদার লাভের সময়।

জনৈক অন্তর্জ্ঞানী বলেছেন, মাছের জন্য পানি যেমন মুমিনের রূহের জন্য ছালাতও তেমন।শিশুর জন্য মায়ের কোল যেমন মুমিনের জন্য ছালাতও তেমন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url